শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট নিয়ে আলোচনা চলছেঃ শিক্ষামন্ত্রী
Monday, July 06 2020manobkantha
করোনা মহামারীর মধ্যেই জুম কিংবা মেসেঞ্জারে স্বল্প পরিসরে চলছে স্কুল, কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও রুটিন মাফিক চলছে অনলাইন ক্লাস, ওপেন বুক এক্সাম এবং অন্যান্য কার্যক্রম। তবে দেশের চাহিদার বিপরীতে নাজুক ইন্টারনেট ব্যাবস্থা এবং তার সাথে যুক্ত ভ্যাট, ট্যাক্সসহ অতিরিক্ত ইন্টারনেট খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দ। তবে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের এই দূর্ভোগ লাঘবে আশার বাণী শুনালেন দেশের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে অথবা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সাথে আলোচনা চলছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির আয়োজনে ‘বর্তমান বৈশ্বিক সংকটকালে শিক্ষা বিষয়ে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের মানবিক দিক বিবেচনা করে মোবাইল অপারেটরদের ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি সংকটই আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেয়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে হলে তাদেরকে তথ্য ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তাই আমাদের হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমে যেতে হতো।
Ad
অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল খালেক এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা। বিশেষ অতিথি হিসেবে এতে যুক্ত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সময়ের টিউশন ফি প্রদানের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অভিভাবক সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, একেবারে টিউশন ফি না দিলে প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষকদের বেতন দিতে পারবে না। তাই দুই পক্ষকেই কিছুটা ছাড় দিয়ে মানবিক হতে হবে।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার বিস্তার এবং মেধাবী জাতি তৈরিতে ইন্টারনেটকে ব্যয় নয়, এটিকে রাষ্ট্রের বড় বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যত শিক্ষার ক্ষেত্র কেবলমাত্র ক্লাসরুম কেন্দ্রিক হবে না। প্রচলিত চক-ডাস্টার পদ্ধতির সাথে ক্লাসরুম ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে হবে। অন্যথায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য মানব সম্পদ তৈরি করতে পারবনা। ৩ হাজার ৮শ’ ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া, ৭শ’ ৭৭টি ইউনিয়নে ব্রডব্র্যান্ড সংযোগ পৌঁছানোসহ দেশের হাওর, দুর্গম দ্বীপ ও চরাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছানোর কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি শিক্ষা বিস্তারের স্বার্থে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উভয়ের জন্যেই ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করতে সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।