বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিং-এর সঙ্গে জড়িতদের তালিকা চেয়েছে ঢাকা
Tuesday, December 03 2019 ঢাকা ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় কয়েকজন অপরাধীর পরিচয় এবং আর্থিক তথ্য জানতে চেয়েছে ম্যানিলার কাছে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া ও প্যাসিফিক) মাসুদ বিন মোমেন আজ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার চার্জশীট প্রদানে আমাদেরকে সহায়তা করতে কয়েকজন অপরাধীর ব্যাপারে তথ্য দিতে আমরা ম্যানিলার প্রতি আহবান জানিয়েছি।
Ad
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ আজ এখানে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হ্যাকাররা নিউইয়র্ক ফেডের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি একাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করে। এর মধ্যে ম্যানিলায় রিজাল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং কপোর্রেশনের মাধ্যমে চারটি একাউন্টে ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং শ্রীলংকায় একটি ব্যাংকে আরো ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ফিলিপাইনের কাছ থেকে প্রায় ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধার করে।
মাসুদ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। ফিলিপাইন অপরাধীদের ব্যাপারে আর্থিক তথ্য এবং এই চুরির সাথে জড়িতদের পরিচয় জানানোর আশ্বাস দিয়েছে। সচিব মাসুদ বলেন, এই দুটি বিষয়ের নিষ্পত্তি হলে রিজার্ভ চুরির মামলায় সিআইডি চার্জশীট প্রদানে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আরো ২০ মিলিয়ন মাকির্ন ডলার দাবি করেছে যা ফিলিপাইন সরকার জরিমানা হিসাবে অপরাধীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে। তবে ফিলিপাইন বলেছে, ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানার অর্থ এবং ওই অর্থের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির কোন সম্পর্ক নেই। মাসুদ বলেন, আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি। এই জরিমানা একই ইস্যুতে করা হয়েছিল। তিনি বলেন, সাইবার ক্রাইম একটি উদীয়মান সমস্যা। বাংলাদেশ ফিলিপাইনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির আপোস মীমাংসা করতে চায়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, বৈঠকে আমি তাদেরকে বলেছি, আমরা যদি এটির সমাধান করতে পারি, তাহলে আমাদের সক্ষমতার বিষয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। অন্য দেশের জন্য এটি একটি মডেল হবে। গত ১০ জানুয়ারি ফিলিপাইনের একটি আদালত মাইয়া দেগুইতো নামে একজনকে সনাক্ত করেছে। এই ব্যাক্তিই আরসিবিসি’র সিটি ব্রাঞ্চ থেকে এই অর্থ চুরি করে। তার ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদন্ড এবং ১০৯ মিলিয়ন ডলার জরিমানা হতে পারে।
মাসুদ আরো জানান, এই সমস্যাটির সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে তাদের মধ্যে আরো সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর দু’দেশই গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি আরো জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আসিয়ানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর অধিক চাপ সৃষ্টি করতে তারা ফিলিপাইনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। এছাড়া উভয় পক্ষ কয়েকটি সমঝোতা স্মারকও বিনিময় করেছে। [ বাসস ]
Ad