এবার যুক্তরাষ্ট্রেই তদন্তের মুখে গুগল
Sunday, June 02 2019the verge
গুগল খুব শীঘ্রই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের তদন্তের সম্মুখীন হতে পারে। দ্যা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। কোম্পানিটির বিস্তৃত সফটওয়্যার সেবা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার উপর এই তদন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে জার্নালটি। উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর ওয়াশিংটন পোস্ট, ব্লুমবার্গ ও নিউইয়র্ক টাইমস এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। উল্লেখ্য, গত মে মাসে ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস হাজেস প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বাজারে প্রতিযোগিতার বিকাশে ফেসবুক ভেঙ্গে দেওয়ার আহবান জানিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনার জন্ম দেন।
Ad
বেনামী সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এই তদন্তের ভার হস্তান্তর করতে পারে। ফেডারেল ট্রেড কমিশন মূলত সব প্রতারণা ও বিশ্বাস লঙ্ঘনের মামলা গুলো নিয়ে কাজ করে। এর আগে এই সংস্থাটি ২০১১ সালে অ্যাপলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিল । মামলার বিষয়বস্তু ছিল অ্যাপল তার সাফারি ব্রাউজারে ব্যবহারকারীকে কিছু না জানিয়ে তাদের তথ্য ও কুকিজ সংরক্ষণ করত। প্রায় ১ বছর পর অ্যাপলকে ২২.৫ মিলিয়ন ডলার জরিমানার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করে বিচার বিভাগ। জার্নালটির মতে ২০১৩ সালে একবার এফটিসি গুগলের বিরুদ্ধে বিশ্বাস লঙ্ঘনের দায়ে তদন্ত করেছিল তবে তারা তখন সেই তদন্ত শেষ না করেই বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন আবার নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ গুগলের বিরুদ্ধে বিশ্বাস লঙ্ঘনের দাবি তুলেছে এবং তদন্ত করতে চাচ্ছে ।
তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন গুগলের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছিল এবং এর বিরুদ্ধে গ্রাহকের তথ্য অন্য কাজে ব্যবহার করার সত্যতাও পেয়েছিল। ইইউ থেকে জরিমানার শাস্তি পেলেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার থেকে কখনও এমন জরিমানা পায় নি গুগল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত বিশ্বের অন্যান্য দেশও এখন গুগলের সেবা ছাড়া অসহায় প্রায় বলা যায়। বিশ্বের ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ব্যবসায় সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান গুগল।। সার্চ ইঞ্জিন, ব্রাউজার, মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম( অ্যান্ড্রয়েড ), ইমেইল এবং আরও অনেক পণ্যগুলোর দিক দিয়ে গুগল প্রবল শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। গুগল এই সকল পণ্যের দ্বারা তার ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে ও সেই অনুযায়ী তার ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞাপন দেখায়। এই তথ্যগুলোর জন্য গুগলকে এখন সিলিকন ভ্যালির অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটারের মত তথ্য পাচারের দায়ে অভিযুক্তও না হলেও ইদানিং গুগল নিজেই কিছু বিষয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। যেমনঃ জিমেইল ও ক্রোমের গোপনীয়তা লঙ্ঘন, ইউটিউবে চরমপন্থা ইত্যাদি।
যদিও এগুলোর কোনোটিই বিশ্বাসহীনতার সংজ্ঞায় আসে না। মূলত টেক কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব আর সিলিকন ভ্যালির অনির্বাচিত কর্তৃত্ব লাভ এই তদন্তের একটি অন্যতম কারন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এলিজাবেথ ওয়ারেন ইতিমধ্যেই গুগলকে ভেঙ্গে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেছেন। গুগল ব্যবসার কোনদিককে ডিওজি তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে তা বলা মুশকিল। বিশ্লেষকদের ধারণা, বিচার বিভাগ ইইউর তদন্তের উপরই লক্ষ্য করে তাদের তদন্ত করবে। এছাড়াও কোম্পানিটি কিভাবে তাদের ব্যবহারকারীদের তথ্য নিয়ে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বাজারে কর্তৃত্ব করছে তার উপর ও তদন্ত করবে বিচার বিভাগ।
Ad