মোবাইল মেলা শুরু শান্তিন‌গরে, অপেক্ষা দর্শনার্থীর

Wednesday, April 09 2014 রাজধানীর শান্তিন‌গরে অবস্থিত ইস্টার্ণ প্লাস শপিং কমপ্লেক্সের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় শুরু হয়েছে আট দিনব্যাপী মোবাইল ও কম্পিউটার মেলা। ৯-১৬ই এপ্রিল মেলায় বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য প্রদর্শন করবেন শীর্ষ মোবাইল ও কম্পিউটার পণ্য পরিবেশকেরা। মেলার প্রথম দিন দর্শনার্থী উপস্থিতি তেমন একটা চোখে পড়েনি এই প্রতিবেদকের। বরং মেলায় বিভিন্ন স্টলে চলছিল শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ। তবে প‌হেলা বৈশাখের পূর্বে আয়োজিত এ মেলায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি ক্রমেই বৃদ্ধি পাবে- এমনটাই আশা আয়োজকদের।

এর আগে সকাল ১১টায় মেলার উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্যমন্ত্রী জনাব হাসানুল হক ইনু । অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি এএইচএম মাহফুজুল আরিফ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ কম্পিটার সমিতির সাবেক সভাপতি জনাব মোস্তফা জব্বার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।



প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এবারের বাজেটে ইন্টারনেট থেকে ভ্যাট তুলে দেয়ার জন্য অর্থমন্ত্রীর পায়ে ধরব। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করব। কম্পিউটার যন্ত্রাংশের যেসব পণ্যে এখনও শুল্ক রয়েছে তা তুলে দেয়ার দাবিও জানাব অর্থমন্ত্রীর কাছে। কেননা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দারিদ্র ও বৈষম্য উচ্ছেদের যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন তা ততক্ষণ বাস্তবায়িত হবে না, যতক্ষণ সবার কাছে স্বল্পমূল্যে তথ্যপ্রযুক্তি না পৌঁছবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনাব জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ৬৪ জেলা ও ৪৮৭ উপজেলায় আগামী এক বছরের মধ্যেই ফাইবার অপটিক কেবলে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া হবে। ২০১৮ সালের মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রকে পরিণত করা হবে ডিজিটাল সেন্টারে। যেখানে প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। তিন বছরে নতুন ২ হাজার বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। ২২ হাজার স্কুলে বিতরণ করা হবে ল্যাপটপ। প্রতি বছর যেন এক কোটি করে গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করতে শুরু করেন সেজন্য যা ব্যবস্থা নেয়া দরকার নেয়া হবে। এক লাখ তরুণ তরুণীকে আউট সোর্সিংয়ের জন্য তৈরি করা হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাঁচ বছরে ১০ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট তুলে দেয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এতে হয়ত কয়েক কোটি টাকা থেকে বঞ্চিত হবে সরকার। কিন্তু দেশের তরুণ প্রজন্ম বদৌলতে তার চেয়ে অনেক বেশিকিছু দেবে। বাধ্যতামূলক কম্পিউটার শিক্ষা চালু করার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, স্কুলগুলোতে হাতে কলমে শিক্ষার জন্য ডিজিটাল ক্লাসরুম তৈরি করে দিতে হবে, সব বাচ্চার হাতে ল্যাপটপ পৌঁছানোর দাবিও তোলেন তিনি। এছাড়া বিসিএসের জন্য জায়গা বরাদ্দের আহ্ববান জানান মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন, যদি সরকার এ জায়গা দেয় তবে পাঁচ বছরের মধ্যেই দেশের সেরা তথ্যপ্রযুক্তি সেন্টার গড়ে তুলবে বিসিএস।

মেলা ঘুরে দেখছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু
মেলা ঘুরে দেখছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু


মেলায় কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট পিসি, স্মার্ট ফোনসহ তথ্যপ্রযুক্তি ও মুঠোফোনের সর্বাধুনিক সংস্করণের পণ্য ও সেবা এবং সফটওয়্যার এ মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হচ্ছে। রয়েছে ডিজিটাল জীবনধারাভিত্তিক বৈচিত্র্যময় পণ্য ও সেবাও। তথ্যপ্রযুক্তি ও মুঠোফোনের প্রায় দেড়শ’ প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। আর তাতে দেয়া হচ্ছে আকর্ষণীয় ছাড় ও উপহার।

মেলায় প্রতিটি কেনাকাটাতেই ক্রেতাদের জন্য থাকছে বিশেষ কুপন। একদিন অন্তর অন্তর এর উপর অনুষ্ঠিত হবে র‌্যাফল ড্র। আর এতে রয়েছে ট্যাবলেট পিসি, স্মার্ট ফোন, স্পিকার, মডেম, পেন ড্রাইভসহ আকর্ষণীয় তথ্যপ্রযুক্তি ও মুঠোফোন পণ্য উপহার। প্রদর্শনীর প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম দিনে থাকছে কুইজ প্রতিযোগিতা। এতে বিজয়ীদের জন্যও উপহার হিসেবে থাকছে আকর্ষণীয় তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য। নির্ধারিত দিনগুলোতে সন্ধ্যা সাতটায় এ কুইজ প্রতিযোগিতা ও র‌্যাফল ড্র অনুষ্ঠিত হবে।

পুরো মেলা চত্বরেই রয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই। ফলে আগত দর্শনার্থীরা বিনামুল্যে উপভোগ করতে পারবেন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ। মেলায় শিশুদের জন্য থাকছে ফ্রি গেমিং জোন। এছাড়াও আয়োজন থাকছে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার। মেলায় প্রবেশের জন্য কোন টিকেট লাগছে না। মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। শেষ হবে ১৬ এপ্রিল। এ মেলায় স্পন্সর হিসাবে রয়েছে অ্যাসুস, এভিরা ও ডি-লিংক। মিডিয়া পার্টনার এটিএন বাংলা, এবিসি রেডিও, সমকাল, কম্পিউটার বিচিত্রা। আইএসপি পার্টনার স্পিড টেকনোলজি ও কানেক্ট বিডি।
share on